আজকের এই পৃথিবী একদিনে তৈরি হয়নি। ধীরে ধীরে বিবর্তনের ধারা মানুষের জন্ম হয়েছে। এর আগে পৃথিবীতে বাস করত ডাইনোসর। তখন তো শুধু সরীসৃপ বাস করত এই পৃথিবীতে। কিন্তু মনে করা হয় যে, কোন একটি উল্কা পাতের ফলে একই সঙ্গে বিবর্তন এসেছিল এই পৃথিবীর। আবার অনেকে মনে করেন, উল্কাপাতের ফলে যে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছিল, তারপরই প্রাণ হারিয়েছিল ডাইনোসর প্রজাতি। তবে ডাইনোসরের প্রজাতি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেলেও তখনকার সময়ের শুধুমাত্র কুমির এখনো পর্যন্ত বহাল তবিয়তে বেঁচে আছে বলে মনে করা হয়। এছাড়াও আরশোলা বেঁচে রয়েছে পৃথিবীর জন্ম সময় থেকে।
কিন্তু কি করে এই আশ্চর্য ঘটনা সম্ভব হল সেই রহস্য উদঘাটন করেছেন কিছু বৈজ্ঞানিক। বিখ্যাত ন্যাচার কমিউনিকেশন বায়োলজি পত্রিকায় প্রকাশিত করা হয়েছিল এই গবেষণা। সমীক্ষা পত্রের প্রধান লেখক অধ্যাপক ম্যাক্স স্টক ডেল।কুমিরদের টিকে থাকার কারণ হিসেবে ইঙ্গিত করেছেন বিবর্তনের দিকে। তিনি মনে করেন যে, কুমিরের শারীরিক বিবর্তন তাকে পৃথিবীতে টিকে থাকতে সাহায্য করেছিল।
স্টকদেল জানিয়েছেন যে, পৃথিবীতে এখনো পর্যন্ত পঁচিশটি কুমিরের প্রজাতি টিকে রয়েছে। কিছু বিশাল আয়োজন প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও বাকি সকলেই বেঁচে রয়েছে পৃথিবীতে। কুমীর ছাড়া অন্য কোনো প্রাণী বহু বছর এই ভাবে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারেনি এই পৃথিবীতে। মনে করা হয় যে,গ্রহাণু আছড়ে পড়ার পর পৃথিবীতে প্রাকৃতিক দিক থেকে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব পড়েনি শুধুমাত্র কুমিরের উপর।
বৈজ্ঞানিক আরো মনে করেন যে, যেহেতু কুমির একটি উভচর প্রাণী তাই অন্য প্রাণীর তুলনায় তার খাপ খাইয়ে নেবার ক্ষমতা অনেক বেশি। একইসঙ্গে জলে এবং স্থলে থাকতে পারে। গভীর জলের তলাতেও প্রায় ঘন্টা খানিক নিঃশ্বাস বন্ধ করে থাকতে কোনো অসুবিধা হয় না কুমিরের। এই সুযোগ সুবিধা অন্য কোন প্রাণীর নেই।
অন্য প্রাণীদের মতো কুমির খাদ্য থেকে বেঁচে থাকার শক্তি আহরণ করে না, সে খাদ্য গ্রহণ করে সূর্যালোক থেকে। কুমিরের পক্ষে এটি সবথেকে বেশি সুবিধাজনক একটি বিষয়। সব মিলিয়ে পৃথিবীর চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য কোনও অসুবিধে হয়নি কুমির প্রজাতির।