তরল সোনা বলতে প্রধানত পেট্রোলিয়াম জাতীয় বস্তুকেই বোঝানো হয়। তবে সারা বিশ্বজুড়ে অন্তত ৪৩ জন ব্যক্তি এমন রয়েছেন যাদের শিরায় শিরায় বয়ে চলেছে সোনার রক্ত! শুনতে অবাক লাগলেও, বাস্তবটা অনেকটা এমনই। এই সোনার রক্ত অবশ্যই সোনার পাথরবাটি নয়! এই রক্ত আসলে এতটাই বিরল যে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের রক্তকে সোনার মতো দামী বলেই মনে করেন। তাই এই রক্তের নাম “গোল্ডেন ব্লাড”।
এই রক্তের অধিকারীরা সংখ্যায় কিন্তু খুব বেশি নন। বিশ্বের প্রায় ৭০০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার মধ্যে এ পর্যন্ত কেবল ৪৩ জন গোল্ডেন ব্লাডের অধিকারীকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই রক্তের অধিকারীদের আরএইচ সিস্টেম ৬১ অ্যান্টিজেনটি অনুপস্থিত। যে কোনো ব্লাড গ্রুপ সাধারণত ৩২৪ টি অ্যান্টিজেনের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে। সেই জায়গায় এই ব্লাড গ্রুপের অধিকারীদের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিজেন অনুপস্থিত থাকে।
আরএইচ সিস্টেম ৬১ অ্যান্টিজেনটি অনুপস্থিত থাকার দরুণ তারা অন্য যে কোনো ব্লাড গ্রুপ সমন্বিত ব্যক্তিকে অনায়াসে রক্তদান করতে পারেন। তবে তাদের থেকে রক্ত নিতে পারেন না। তাই এই ব্লাড গ্রুপের কোনো ব্যক্তির কখনো রক্তের প্রয়োজন পড়লে ব্লাড ব্যাংকে তা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। যতটা সম্ভব এদের সাবধানতা অবলম্বন করতেই হয়। বিগত ৫৮ বছরের ইতিহাসে সারাবিশ্বে তন্ন তন্ন করে খুঁজে মাত্র ৪৩ জন ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, যারা এই ব্লাড গ্রুপের অধিকারী।
বিগত দুই বছর আগেই গোল্ডেন ব্লাড গ্রুপের অধিকারী ১০ জনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। বিরলের মধ্যে বিরলতম এই ব্লাড গ্রুপটি ১৯৬১ সালে প্রথমবার আবিষ্কৃত হয়। এই ব্লাড গ্রুপের সদস্যরা যেহেতু অন্যের থেকে প্রয়োজনে রক্ত নিতে পারেন না, সেক্ষেত্রে গোল্ডেন ব্লাড গ্রুপের সদস্যরাই কেবল একে অন্যকে রক্তদান করতে পারেন।